ইসলাম ধর্ম প্রবর্তিত হওয়ার শুরু থেকেই সাহাবীরা কোরআনের আয়াতগুলো লিখে রাখতেন। কোরআন সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্য ছাড়াও এর আরো একটি কারণ ছিল আর তা হল নামাযের মধ্যে কোরআনের আয়াত মুখস্ত পড়তে হতো । নবী ﷺ একদল সঙ্গী ছিলেন যাদের একমাত্র কাজ ছিল এগুলোকে সংরক্ষণ করা। কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার সাথে সাথেই মুসলমানদের মধ্যে কুরআন কণ্ঠস্থ করার প্রক্রিয়াও জারী হয়ে গিয়েছিল।শুধু খেজুড় পাতা ,হাড় ও পাথরে খোদাই করে সংরক্ষণ করার উপায়ের উপর তা নির্ভরশীল ছিল না বরং কোরআনের একটি আয়াতঅবতীর্ণ হওয়ার সাথে সাথেই শ থেকে হাজার , হাজারো থেকে লক্ষ মনে অংকিত হয়ে যেত সেই আয়াতগুলো। খলিফাআবুবাকার এর শাসনকালে বেশ কয়েকজন হাফিয মারা যান। এতে উমর র. চিন্তিত হয়ে পড়লেন এবং ভাবলেন শুধু হাফিযদের উপরই পুরোপুরি নির্ভর করা উচিৎ নয়। কাগজের পাতায় তা সংরক্ষণ করার প্রয়োজন। তাই তিনি এ ব্যাপারে স্পষ্টভাবে জানালেন খলিফা আবুবাকার কে। চিন্তাভাবনার পর তিনিও একমত হলেন। কোরআন সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় অংশ হিসেবে তিনটি পদক্ষেপ নেয়া হল।
১. সাহবীদের দিয়ে নবি স. যেসব বিচ্ছিন্ন বস্তুর ওপর কুরআন লিখে গেছেন সেগুলো সংগ্রহ করা।
২. সাহাবীদের মধ্যে যার যার কাছে কুরআনের যেসব বিচ্ছিন্ন অংশ লিখিত আছে তাদের কাছ থেকে সেগুলোও সংগ্রহ করা।
৩. অসংখ্য কোরআনে হাফিয থেকে সাহয্য নেয়া ও যাচাই বাছাইয়ের কাজে তাদের মতামত নেয়া।
সম্ভবত এর আগে ধর্মগ্রন্থ যাচাই বাছাই করে তা সংরক্ষণ করার প্রচেষ্টা এমন বৈজ্ঞানিক পন্থায় করা হয়নি। ইতিহাস সংরক্ষণ করার নজীরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হলো তখন থেকেই। অনেক পাশ্চাত্য পণ্ডিতের মতে ইতিহাসে এই সর্বপ্রথম তত্ব সংরক্ষণের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রচলিত হয়। এ প্রক্রিয়ায় সাহবীরা দীর্ঘ গবেষণার পর ১০০% নির্ভুলতা নিশ্চিত করেন। রাত দিন অক্লান্ত ও বিরামহীন দীর্ঘ গবেষণার পর তা নিশ্চিত করা হয়। হযরত হাফসা যিনি নবি স. এর স্ত্রী ছিলেন তার কাছে কোরআনের এই নির্ভূল প্রামাণ্য সংকলনটি রেখে দেয়া হয়। তখন থেকে সবাই তার অনুলিপি করার বা তার সাথে যাচাই করে নিজের পাণ্ডুলিপি সংশোধন করে নেয়ার সাধারণ অনুমতি পায়।
তথ্যসূত্র: কোরআন সংরক্ষণের ইতিহাস
No comments:
Post a Comment